ডায়েট করতে জরুরি কিছু পরামর্শ

ডায়েট করতে জরুরি কিছু পরামর্শ

অনেকেই না জেনে ভুলভাবে ডায়েট (পথ্য) চার্ট করেন। তবে একটু জেনে-বুঝে খেলে অনেক সুন্দরভাবেই স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়।

ডায়েটিং কী? ডায়েটিং মানে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যগুলো পরিমিত ও সুষমভাবে খাওয়া। সাধারণত ওজন কমানো এবং ওজনকে স্থিরভাবে ধরে রাখার জন্য ডায়েটিং করা হয়। সুস্থ ও স্লিম থাকার জন্য ডায়েটিং করা দরকার। সে ক্ষেত্রে কম শর্করা, কম ক্যালরি, কম ফ্যাটযুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে সব ধরনের খাদ্য উপাদান, অর্থাৎ ভিটামিন, শর্করা, আমিষ, ফ্যাট, মিনারেল, আঁশ, পানি ইত্যাদি থাকলেই সেটা হবে আদর্শ ডায়েট।

ডায়েটের ক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ

  • প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। সাধারণত নারীদের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস (দুই লিটার), পুরুষদের জন্য ১২ গ্লাস (তিন লিটার) পানি পান করতে হবে। এটি সারা দিনের সব রকমের পানীয়ের হিসাব। তবে যাঁরা ব্যায়াম করেন, তাঁরা আরো বেশি পানি পান করবেন। আর কিডনি রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পানের বিষয়টি নির্ধারণ করবেন।
  • রাতের খাবার ঘুমানোর তিন ঘণ্টা আগে খেতে হবে। রাতে ঘুমানোর সময় ক্ষুধা লাগলে ননি বা ফ্যাট ছাড়া দুধ খেতে পারেন।
  • খাবারে শর্করার পরিবর্তে সবজি ও ফল রাখা দরকার। কারণ, এগুলোতে আছে প্রচুর ভিটামিন, আঁশ।
  • সালাদ বেশি বেশি খেতে হবে। দুপুর ও রাতের খাবারের সঙ্গে অবশ্যই সালাদ থাকবে।
  • মাছ অবশ্যই খেতে হবে। মাংস কম খেয়ে মাছ বেশি খাবেন। লাল মাংস, যেমন—গরুর মাংস এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
  • সাদা আটার রুটি না খেয়ে লাল আটার রুটি খাওয়া ভালো। কারণ, লাল আটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তেমনি সাদা শর্করা, যেমন—সাদা চালের ভাত বাদ দিয়ে লাল চাল খাওয়া ভালো।
  • কাঁচা ছোলা প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কারণ, এগুলোতে আছে কম ফ্যাট, রয়েছে কোলেস্টেরল কমানোর উপাদান। এ ছাড়া ভিটামিন-বি আছে এগুলোতে। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
  • ঘুমানোর আগে দুধ খাওয়া উচিত, অবশ্যই লো ফ্যাট দুধ।
  • প্রতিদিন টক দই খেতে পারেন। তবে চিনি ছাড়া।
  • নারীদের জন্য ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতেই হবে, যেমন—দুধ, টক দই ইত্যাদি।
  • ভাত কম খেয়ে সবজি, ফল, সালাদ বেশি খান।
  • প্রতিদিনে অল্প পরিমাণে পাঁচ থেকে ছয়বার খেতে হবে।
  • দু-তিন ঘণ্টা পর পর ২০০-৩০০ ক্যালরি খাওয়া সবচেয়ে ভালো অভ্যাস।
  • ভাজা-পোড়া, বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাবেন।
  •  প্রাণিজ আমিষ সব সময় না খেয়ে উদ্ভিজ আমিষ বেশি খাবেন। কারণ, উদ্ভিজ আমিষে ফ্যাট কম থাকে।
  •  প্রতিদিন একমুঠো কাঠবাদাম খেতে হবে। এতে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে, কোলেস্টেরল কমে।
  • প্রতিবার খাবারে আমিষ খেতে হবে পরিমাণমতো। আমিষ হতে পারে—মাছ, সাদা মাংস (মুরগির মাংস ইত্যাদি), বিনস, বাদাম, ডাল, পনির, দই ইত্যাদি। কারণ, আমিষে শর্করার তুলনায় কম ক্যালরি থাকে। এটি পেট ভরা রাখে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি পেশি গঠনেও সাহায্য করে।
  • বেশি তেল ও মসলাযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। তবে মসলা ভালো, বিভিন্ন রকম মসলার বিভিন্ন গুণাগুণ আছে। তবে পরিমাণমতো দিয়ে রান্না করতে হবে।
  • ভাজা-ভুনা নয়, সেদ্ধ খাবার বেশি খান। আর রান্না করুন কম আঁচে।
  • খাবারের তালিকায় প্রচুর আঁশসমৃদ্ধ খাবার, যেমন—লাল আটা, শাক, সালাদ, সবজি, ফল রাখুন। কারণ, আঁশ ওজন কমায়, হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোলেস্টেরল কমায়। নারীর জন্য ২১-২৫ গ্রাম ও পুরুষদের জন্য ৩০-৩৮ গ্রাম আঁশ খেতে হবে প্রতিদিন।
  • খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খাবেন না। কারণ, অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি বাড়ায়; ব্লাডপ্রেশার ও ওজন বাড়ায়। যে খাবার রান্না করা হয়, তার মধ্যেই অনেক লবণ থাকে। তাই বাড়তি লবণ খাওয়ার দরকার নেই।

লেখক : প্রধান প্রশিক্ষক ও ইনচার্জ, পারসোনা হেলথ

social position

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *